ঈদের কেনাকাটা

ঈদের কেনাকাটা করতে এসে ধর্ষণের শিকার কিশোরী!
ভোলার চরফ্যাশনের শশীভূষনে ঈদের কেনাকাটা করতে এসে বাজারের একটি দোকানে মোবাইলের চার্জ দিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম নামে দুই সন্তানের জনককে গ্রেফতার করে রবিবার বিকালে আদালতে সোপর্দ করেছে শশীভূষণ থানা পুলিশ।
এর আগে শনিবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় শশীভূষণ মাছ বাজারের ব্যবসায়ী সুমনের দোকানের পেছনের শয়নকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে ভুক্তভোগী কিশোরীর ডাক চিৎকারে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ও যুবকরা ছুটে এসে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
এ ঘটনায় রবিবার দুপুরে ওই কিশোরী বাদী হয়ে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম, দোকান মালিক মো. সুমন ও রফিকুলের সহযোগী মো. স্বাধীনসহ তিনজনকে আসামি করে শশীভূষণ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃত রফিকুল ইসলাম এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী মোতালেফ মিয়ার ছেলে ও শশীভূষণ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা মিয়ার ভাই এবং অপর দুই আসামি সুমন ওই ইউনিয়নের আবুল হোসেনের ছেলে ও স্বাধীন ওই এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানাযায়, ওই কিশোরী শনিবার বিকালে ঈদের কেনাকাটা করতে শশীভূষণ বাজারে আসেন। এসময় তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে চার্জ চলে গেলে কিশোরী ব্যবসায়ী সুমনের দোকানে মুঠোফোন চার্জ দিতে যান। এসময় ব্যবসায়ী সুমন ওই কিশোরীকে তার দোকানে পেছনের শয়নকক্ষে নিয়ে ফোন চার্জ দিতে বলেন। কিশোরী ওইখানে বসেই তার ফোন চার্জ দিচ্ছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম ও স্বাধীন নামের ওই যুবক দোকানে পেছনে যান এবং অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম তার সঙ্গী স্বাধীনকে পাহারায় রেখে কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। পরে কিশোরীর ডাক চিৎকারে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও যুবকরা ছুটে গিয়ে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন। এসময় ব্যবসায়ী ও স্থানীয় যুবকদের উপস্থিতি টের পেয়ে দোকান মালিক সুমন ও স্বাধীন পলিয়ে যান। পরে তারা অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
এ বিষয়ে শশীভূষণ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মিয়ার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
শশীভূষণ থানার ওসি তারিক হাসান রাসেল জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত রফিকুল ইসলাম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছেন। এবং ওই কিশোরীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর সহযোগী অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মিরসরাইয়ে জমজমাট ঈদের কেনাকাটা
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে ঘিরে কেনাকাটা জমে উঠেছে। এবার রমজানের শুরু থেকে বিকিকিনি ভালো হচ্ছে। ক্রেতা টানতে উপজেলার বিপনী বিতানগুলোতে আলোকস্বজ্জার পাশপাশি নিত্য নতুন পোষাকের পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিবছরের মত এবারও মার্কেটে পুরুষের চেয়ে নারী ক্রেতাদের ভীড় দেখা গেছে। ২০ রমজান থেকে বেচাকেনা আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যান্য বছরগুলোতে ১৫ থেকে ২০ রমজান থেকে ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়। এবার প্রথম রমজান থেকে ক্রেতাদের ভীড় ভেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন বাজারের মার্কেটে ক্রেতাদের ভীড় রয়েছে। ক্রেতাদের কাছে টানার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতাদের প্রতি লক্ষ্য রেখে দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন পোশাকে সাজানো হয়েছে উপজেলার মার্কেটগুলো।
দেশীয় জামদানি, টাঙ্গাইল ও তাঁতের নতুন ডিজাইনের শাড়িসহ নারীদের বিভিন্ন পোশাক বিক্রি হচ্ছে ধুমধারাক্কা। ফ্যাশনের পাশাপাশি ঐতিহ্যতেও গুরুত্ব দিচ্ছেন নারীরা। আর প্রচুর কালেকশনের পাশাপাশি দাম স্বাভাবিক থাকায় খুশি তারা। দোকানগুলো শাড়ী, থ্রিপিস, পাঞ্জাবী, জুতা, বাচ্চাদের নানা রঙের কাপড় দিয়ে সাজানো হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ভাইরাল ও ফারসি। এই দুই পোষাক ক্রেতাদের বেশী আকৃষ্ট করছে, বিক্রিও হচ্ছে ভালো। এছাড়া নতুন কালেকশানের মধ্যে রয়েছে সারারা, আলিয়া কার্ড, সাদা বাহার, ওয়াকা, সাকিরা, তেরেনাম, সোহানা সহ নানা ধরনের নিত্যনতুন ডিজাইনের পোষাক রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বড় ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র বারইয়ারহাটের মসজিদ গলির লাকী ফ্যাশন মল ও সেঞ্চুরী মার্কেটে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর লাকি ফ্যাশন মল। পুরুষের তুলনায় নারীদের ভিড় সবচেয়ে বেশি। এবার নতুন কালেকশানের মধ্যে রয়েছে ভাইরাল ও ফারসি। এছাড়া সারারা, আলিয়া কার্ড, সাদা বাহার, ওয়াকা, সাকিরা, তেরেনাম, সোহানা সহ নানা ধরনের নিত্যনতুন ডিজাইনের পোষাক রয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঈদকে ঘিরে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে উপজেলার বানিজ্যিক প্রাণ কেন্দ্র বারইয়ারহাটের গ্রীণ টাওয়ারের অর্কিড, হোম প্লাস, সুলতান, সেঞ্চুরী সুপার মার্কেট, মসজিদ গলির লাকি ফ্যাশন মল, আল আমিন মার্কেট, জমিদার মার্কেট, জোরারগঞ্জ, আবুরহাট, মিঠাছরা, বামনসুন্দর দারোগাহাট, আবুতোরাব, মিরসরাই সদরের মোজাম্মেল এন্ড আজিজুল টাওয়ার, কাশেম শপিং কমপ্লেক্স। শাড়ী থ্রিপিসের পাশাপাশি প্রসাধনী, পারফিউম, কসমেটিক সামগ্রী, জুতা সহ বিভিন্ন পন্য ক্রয় করছেন ক্রেতারা। বারইয়ারহাট মসজিদ গলির হাসান সুজ, অহনা সুজ, আয়েশা সুজ, গ্রীন টাওয়ারে অবস্থিত লটো, বাটা, এপেক্স বারইয়ারহাটের নূর সু গ্যালারী, মিঠাছরার জুতার হাট শোরুমে ভালো বিকিকিনি লক্ষ্য করা গেছে। বিক্রির দিক থেকে এবারো শীর্ষে থাকতে পারেন বারইয়ারহাটের ঐতিহ্যবাহী লাকি ফ্যাশন মল, মিঠাছড়ার খাজা ক্লথ ও আবুতোরাবের ভূঁইয়া ক্লথ স্টোরে।
বারইয়ারহাট লাকী ফ্যাশন মলের স্বত্বাধিকারী মো. শামসুদ্দিন বলেন, প্রায় তিন যুগেরও বেশী সময় ধরে বারইয়ারহাটে আমরা সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছি। এবার রমজানের শুরু থেকে বেচা-কেনা মোটামুটি ভালো চলছে। আশা করছি ২০ রমজানের পর আরো বেশি বিক্রি হবে। অন্যদিনের তুলানায় ছুটির দিনে ভিড় বেশি হচ্ছে।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদের কেনাকাট করতে পারে এ জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। এছাড়া থানার অন্যান্য বাজারে পুলিশের টহল টিম রয়েছে। পাশাপাশি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চুরি-ছিনতাই রোধে আমার থানায় এলাকায় পুলিশের কয়েকটি টিম ভাগ হয়ে কাজ করছে।
এসআর

ঈদের কেনাকাটা না করে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের ২০ লাখ টাকা দিলেন হিজড়ারা
রাজধানীর বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য ২২ লাখ টাকা সহায়তা করেছে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা। সারা দেশে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর (হিজড়া) কেউ এবার ঈদুল ফিতরের কেনাকাটা না করে সেই টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তার জন্য অনুদান হিসেবে তুলে দিয়েছে।
আজ রোববার (০৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় বঙ্গবাজারে পুড়ে যাওয়া মার্কেটস্থলে তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ২০ লাখ টাকা তুলে দেওয়া হয়। এর আগে সকালে এসে এক হিজড়া ২ লাখ টাকা দেন ক্ষতিগ্রস্তদের।
বাংলাদেশ হিজড়া উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশ্মির দিপালী হিজড়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে আমরা তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলেছি। আজকে তাদের এই বিপদের সময় আমরা আমাদের এবারের ঈদের যেসব কেনাকাটা রয়েছে, সেই কেনাকাটা না করে আমরা আমাদের এই ব্যবসায়ী ভাইদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। সারা দেশ থেকে ২০ লাখ টাকা আমরা তুলেছি। সেই টাকা আজ তাদের কাছে দিতে এসেছি। তারা বেঁচে থাকলে আমরাও বেঁচে থাকব।’
হিজড়াদের গুরুমা রাখি শেখ বলেন, ‘আমরা মানুষের কাছ থেকে এক-দুই টাকা করে উঠিয়ে উঠিয়ে এই টাকা জমিয়েছি। এখন আমরা সেটা মানবতার কল্যাণেই দিয়ে দিব। এই টাকা কোনো ব্যবসায়ীর হাতে হাতে দেয়া হবে না; পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তা তহবিলে জমা দেয়া হবে। সেখান থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের হাতে হাতে এই টাকা পৌঁছানো হবে।’
এই অনুদান হস্তান্তরকালে ঢাকাসহ আশপাশের গুরুমারা আসেন। শতাধিক হিজড়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, হজ্বের জন্য দুই লাখ টাকা জমিয়েছিলেন রাজধানীর উত্তরা এলাকার তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের সর্দারনী আলেয়া। বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দুর্দশা দেখে এবার হজ্ব না করে সেই দুই লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছেন তিনি।
আলেয়া হিজরা বলেন, বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের খবরে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। এক সময় আমরা এখানকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা সাহায্য নিয়েছি। আজ সেই ব্যবসায়ীরাই সব হারিয়ে নিঃস্ব। তাই আমি আমার হজের জন্য জমানো টাকা থেকে দুই লাখ টাকা এই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দিচ্ছি।
এ সময় তিনি বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
আপনার অনুসন্ধানকৃত ডাটা খোঁজে পাওয়া যায়নি
